জেলা শহরে অবস্থিত হয়েও যে বিদ্যালয়টি সমগ্র দেশে একটি মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে সেটি যশোর পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। পুলিশ বিভাগের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সঠিক নির্দেশনা, পরিচালনা পরিষদের সময়োচিত পদক্ষেপ এবং শিক্ষকমন্ডলীর নিরলস পরিশ্রম এ বিদ্যাপীঠকে বর্তমান অবস্থায় উন্নীত করতে সাহায্য করেছে।
১৯৫২ সালে পুলিশ সদস্যদের সহযোগিতায় বিভাগীয় ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শেখানোর মানসে যশোর পুলিশ লাইনের পূর্ব-দক্ষিণ কোণে পরিত্যক্ত টিনশেডের একটি কক্ষে বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। শুরুতে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে শিক্ষা কার্যক্রম সীমাবদ্ধ থাকলেও পরবর্তীতে সর্বজনীন বিদ্যাপীঠ হিসেবে পরিচালিত হয়ে আসছে। ধারাবাহিক সাফল্য এবং নিয়ম-শৃঙ্খলার মানদন্ডে এ বিদ্যাপীঠ জাতীয় পর্যায়ে দু’বার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাধ্যমিক) হিসেবে (২০০০ ও ২০০৪) বিবেচিত হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। দেশীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় মাধ্যমিক স্তর অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেদিকটি মাথায় রেখেই প্রতিটি শিক্ষকই এখানে পথ-প্রদর্শকের ভূমিকায় কাজ করেন। সহ পাঠ্যক্রমিক কাজকর্মে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে উদ্বুদ্ধ করা হয় এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ নিজেরা অংশগ্রহণ করে শিক্ষার্থীদের শিখন কার্যক্রমকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলেন। বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ। শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার চোখে পড়ার মত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে তথ্যের আদান-প্রদান মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় এনেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। মুখস্থ বিদ্যায় পারদর্শী না হয়ে সৃজনশীল মেধা বিকাশের ক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদান স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রথম ধাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। শিক্ষাব্যবস্থায় গতিশীলতা আনতে এবং বাহুল্য সময় ও শ্রমকে পরিহার করে যাবতীয় তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, যশোর এর একটি নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে যা থেকে অত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিশেষভাবে উপকৃত হবে। প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ওয়েবসাইট খোলার যে নির্দেশনা শিক্ষা মন্ত্রণালয় দিয়েছে তা যথার্থই সময়োপযোগী। এ নির্দেশনাকে সাধুবাদ জানিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
পরিশেষে সকলের এ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা সফল হোক পরম করুনাময়ের কাছে এ প্রার্থনাই করি।
শিক্ষা-ই আলো। শিক্ষা-ই জাতির উন্নতির মানদন্ড। শিক্ষা ছাড়া জাতীয় উন্নতির আশা কোনভাবেই সম্ভব নয়। বিশেষত; বর্তমান আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে সর্বাগ্রে প্রয়োজন মানসম্মত শিক্ষা।
মান সম্মত শিক্ষা বিস্তারের দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের যশোর জেলা শাখার স্বতস্ফুর্ত সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হয় যশোর পুলিশ লাইন স্কুল। অত্র অঞ্চলের সুশিক্ষায় নেতৃত্ব দানের মহৎ উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় এই বিদ্যায়তনটি। প্রতিষ্ঠার ঊষালগ্ন থেকেই অত্যন্ত সুনামের সাথে নিজেদের জাতীয় অঙ্গীকার পূরণ করে চলেছে বিদ্যালয়টি। একঝাঁক নিবেদিত প্রাণ আত্মপ্রত্যয়ী শিক্ষক-শিক্ষিকা শিক্ষা-সেবা প্রদান করছেন আত্মউৎসর্গকৃত শিক্ষা-অন্ত প্রাণ প্রধান শিক্ষকের তত্ত¡াবধানে। যশোর পুলিশের সার্বিক সহযোগিতা, সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা ও সুদক্ষ পরিচালনায় অত্র প্রতিষ্ঠান জাতীয় গুরু দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে, নিরলস অধ্যবসায়ের সাথে। যশোর শহরের প্রাণ কেন্দ্রে অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে অবস্থান এই বিদ্যালয়ের। শিশু-কিশোরের মনো-দৈহিক সুষম বিকাশ নিশ্চিত করার জন্য পাখিদের কলকন্ঠের সাদর সম্ভাষণ অতীব গুরুত্বপূর্ণ। সে ধরনের শ্যামল ছায়ার নীচে জ্ঞানের নিবিড় সাধনায় নিরত আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম। তাদের অক্লান্ত সাধনায় তারা ইতিমধ্যেই অর্জন করেছে দেশ সেবার খ্যাতি। শিক্ষার পাশাপাশি মননশীল বিকাশের সকল শাখায় তাদের খ্যাতি ও প্রাপ্তি ঈর্ষণীয়। এই বিদ্যালয়ের বহু শিক্ষার্থীই এখন তাদের শিক্ষা জীবন শেষ করে জাতির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে প্রার্থনা করি আমাদের প্রাণপ্রিয় বিদ্যালয়টি উত্তরোত্তর আরো সাফল্য লাভ করুক। বিদ্যালয়ের সাথে জড়িত সকল সূধীবৃন্দকে সাধুবাদ জানাই তাদের মূল্যবান সহযোগিতার জন্য। ধন্যবাদ।
কেবলমাত্র দক্ষিনাঞ্চলই নয়, সমগ্র দেশে যে কটি বিদ্যাপীঠ অতি অল্প সময়ের মধ্যে শিক্ষাদানের মানকে সুউচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে তার মধ্যে যশোর পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয় অন্যতম। সঠিক নেতৃত্ব, সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত, শিক্ষক মন্ডলীর নিরলস শ্রম বিদ্যাপীঠকে উত্তরোত্তর ঈর্ষণীয় সাফল্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। শৃঙ্খলা, পরিচ্ছন্নতা সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের মনন বিকাশেও এ বিদ্যাপীঠের সাফল্য চোখে পড়ার মত। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় নানা প্রতিকূলতার সাথে লড়াই করে ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যাপীঠ সগৌরবে দেশের শিক্ষা কার্যক্রমের মানকে সমুন্নত রেখে চলেছে। প্রতি বছরই এখান থেকে অসংখ্য শিক্ষার্থী ঈর্ষণীয় সাফল্য নিয়ে পাশ করছে। জাতীয় পর্যায়ে দু’বার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হওয়ার সুনাম অর্জন করেছে এ বিদ্যাপীঠটি। স্থানীয় পর্যায়েও শ্রেষ্ঠত্বের নানাবিধ স্বীকৃতি অর্জন করে শিক্ষার মহান ব্রতকে গণমুখী করে তুলেছে এ বিদ্যাপীঠটি। শিক্ষা পরিবেশ বান্ধব এ বিদ্যালয়টি আজ সমগ্র দেশে একটি মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।